একনজরে রাঙ্গাবালী

চারদিন সাগরে ভেসে থেকে বেঁচে ফিরলেন ৯ জেলে 

নিজস্ব প্রতিবেদক
১০ জুলাই ২০২৫, ০৭:০১ বিকাল
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজে অবস্থিত রাঙ্গাবালী নৌপুলিশ কেন্দ্রে উদ্ধার হওয়া ৯ জেলে।

চারদিন সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে প্রাণে বেঁচে ফিরে এসেছেন ৯ জেলে। বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে বরগুনার একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যাওয়ার চারদিন পর তাদের বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর সোনারচর সংলগ্ন সাগর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে ডুবে যাওয়া ট্রলারের বাকি তিন জেলে উদ্ধার হয়েছে কিনা- এর সঠিক কোন খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান নৌপুলিশ। 

উদ্ধার হাওয়া জেলেদের তথ্যমতে, বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পশ্চিম মঠের খাল এলাকার আলমগীর খলিফার মালিকানাধীন ‘এফবি সাইকূল’ নামের ট্রলারটি ১২ মাঝিমালাসহ গত ৫ জুলাই গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। পরদিন ৬ জুলাই সকাল ৬টার দিকে উত্তাল সাগরে প্রবল ঢেউয়ের কবলে পড়ে পায়রা সমুদ্র বন্দরের শেষ বয়ার কাছে ট্রলারটি ডুবে যায়।

উদ্ধার হওয়া ট্রলারের মাঝি কবির হোসেন বলেন, ‘ট্রলারে থাকা রিং বয়া ও ফ্লুট আঁকড়ে ধরে একত্রে ভেসে থাকতে থাকেন তারা ১২ জনই। প্রথমে সবাই একত্রে থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢেউ ও স্রোতের তোড়ে তিনজন জেলে আলাদা হয়ে যান। বাকি ৯ জন প্রাণপণ লড়ে বেঁচে ছিলেন। চারদিন সাগরে ভেসে ভেসে তারা চলে আসেন রাঙ্গাবালী উপজেলার সোনারচর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের দিকে। বুধবার সকালে মাছ ধরতে যাওয়া একটি জেলে ট্রলার তাদের ভেসে থাকতে দেখে উদ্ধার করে দুপুরে রাঙ্গাবালী নৌপুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। 

উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন-কবির হোসেন (৫২), এবাদত (৩৬), আল আমিন সিকদার (২৮), জাহিদ (২৭), রাসেল (২৪), ইব্রাহিম খান (৪০), মুনসুর (২৮), শাহ আলম (৬২) ও নূরুল হক (৪৫)। তাদের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। তারা জানান, চারদিন তারা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি ছাড়াই লবন পানি খেয়ে সাগরে ভেসে ছিলেন। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি, ঢেউ আর মৃত্যুভয়কে সঙ্গী করে বেঁচে ফেরার সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। 

তবে উদ্ধার হওয়া জেলেদের দেয়া তথ্যমতে, বাকি তিন জেলে উদ্ধারের সঠিক কোন খবর পাওয়া যায়নি। খোঁজ না পাওয়া ওই জেলেরা হলেন-পাথরঘাটার হোগলাপাশা গ্রামের খবির আলী মিয়া, সোহাগ ও গোপাল মিস্ত্রী। ট্রলার মালিক আলমগীর খলিফার ভাই পরিচয় দিয়ে জহির মাঝি নামের এক ব্যক্তি জানান, রাঙ্গাবালীর অপরপ্রান্ত থেকে নিখোঁজ তিন জেলেকেও পাওয়া গেছে।  

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী নৌপুলিশ ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া ৯ জন জেলেকে চরমোন্তাজ স্লুইস বাজারে এনে  প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।  ট্রলার মালিককে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসলে জেলেদেরকে হস্তান্তর করা হবে। বাকি তিন জেলের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে তাদেরকেও পাওয়া গেছে। কিন্তু সেটা নির্ভরযোগ্য সূত্র নয়।’  

তিনি আরও বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া জেলেরা ফ্লুট নিয়ে ভেসে ছিল। সাগরে থাকা অন্য জেলেরা তাদের দেখে উদ্ধার করে। পরে সংবাদ পেয়ে আমরা গিয়ে সোনারচর সংলগ্ন আন্ডারচর এলাকা থেকে আমরা তাদেরকে উদ্ধার করে চরমোন্তাজ নিয়ে আসি।’