পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চল দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, দেশের নদীপথ যেন আরও সচল হয়, সে জন্যও আমি চেষ্টা করছি। পায়রা বন্দর পর্যন্ত যদি রেললাইন চলে আসে তাহলে এ বন্দর আরও কার্যকর হবে।
রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের উচিত বাস্তবভিত্তিক ও টেকসই পরিকল্পনার মাধ্যমে বন্দর ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও কার্যকর করে তোলা। অথচ আমাদের দেশে যখন একটি নতুন পোর্ট গড়ার বা চট্টগ্রাম বন্দরের পাশে আরেকটি পোর্ট তৈরির কথা বলা হয়, তখনই বলা হয় ‘দেশ চলে গেলো’। আবার চট্টগ্রাম বন্দরে যদি কোনো অপারেটর নিয়োগের কথাও ওঠে, তখনও বলা হয় ‘দেশ চলে গেলো’। বিষয়টি এমন যেন- চিলে কান নিয়ে গেছে ,আর সবাই দৌঁড়াচ্ছে।
তিনি জানান, আমরা বেসরকারি ও বিদেশিদের বিনিয়োগে আগ্রহী হতে বলেছি। বরিশালে যদি আমরা কনটেইনার টার্মিনাল করি, তাহলে হয়তো ভালো হবে।
এসময় মাতারবাড়ীতে আন্তর্জাতিক মানের গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলা, পায়রা বন্দরের ড্রেজিং, মোংলা বন্দর ব্যবহার করে রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানির উদ্যোগের কথাও জানান নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কোনো মাফিয়া চক্রকে আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে নই। আপনারা জানেন, আমরা চট্টগ্রাম বন্দরকে কীভাবে বের করে এনেছি। আগে টেন্ডারের শর্ত এমনভাবে করা হতো, যেন নির্দিষ্ট কিছু লোক ছাড়া আর কেউ অংশ নিতে না পারে। কিন্তু আমি বা এই সরকার কখনই কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পক্ষে নই।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল জানান, ২০২৬ সালের জুলাইয়ের মধ্যে বন্দরের প্রথম টার্মিনাল চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দপ্তর, সামরিক ও বেসামরিক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বন্দর ব্যবহারকারী অংশীজন, মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও নেদারল্যান্ডসের রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভি’র প্রতিনিধিবৃন্দ এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহমেদ এবং রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভির টিম লিডার মেনো মুইজ মাস্টারপ্ল্যানের বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন। বন্দরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কৌশল নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর মোহাম্মদ আব্দুল কাদের।